|সর্বশেষ

6/recent/ticker-posts

Header Ads

ব্রয়লার মুরগির ঔষধের তালিকা । ব্রয়লার মুরগীর কোন রুগের কোন ঔষধ জেনে নিন ২০২১ - technologyinfobd

ব্রয়লার মুরগির ঔষধের তালিকা 

ব্রয়লার মুরগি পালন অনেক লাভজনক পেশা । বর্তমানে অনেকে ব্রয়লার পালনকে পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছে দিন দিন । কিন্তু ব্রয়লার পালনে জুকি বা রিস্ক বেশি সবকিছু হারিয়ে পথে বশে যেতে পারেন যদি সঠিক চিকিৎসা না জানেন । আজকে কোন রুগের কোন ঔষধ তা আলোচনা করবো ।


ব্রয়লার মুরগির ঔষধের তালিকা । ব্রয়লার মুরগীর কোন রুগের কোন ঔষধ জেনে নিন ২০২১ - technologyinfobd
ব্রয়লার মুরগির ঔষধের তালিকা । কোন রুগের কোন ঔষধ জেনে নিন ২০২১ - technologyinfobd



বর্তমানে ব্রয়লার মুরগীর খামার আমাদের দেশে আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। কিন্তু সঠিক পরিচর্চা বা রোগের লক্ষন দেখে চিকিৎসা না বুঝার কারনে হাজার হাজার খামারী আজ পতে বসছে ঋনের বোঝা মাথায় নিয়ে। আজকে আমি আপনাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু টিপ্স শেয়ার করবো যার মাধ্যমে আপনি অল্প খরচে পোল্ট্রি মুরগির রোগ নির্ণয় করে ব্রয়লার মুরগির ঔষধের তালিকা তৈরি করে চিকিৎসা করতে পারেন সহজে কোন ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া। কারণ আপনি যদি ডাক্তারের পরামর্শ নেন তাহলে তারা অযতা আপনাকে অনেক ঔষধ দিবে যার ফলে আপনার অতিরিক্ত টাকা খরচ হবে।


এর প্রধান কারণ হলো বর্তমানে বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির ছড়াছড়ি নামে বেনামে সকলে চায় তাদের প্রডাক্ট সেল বৃদ্ধি করতে তাই তারা ভেটেরিনারি ডাক্তারদেরকে টাকা দিয়ে কন্টাক্ট করে ফেলে যে মাসে আমাদের এই সকল প্রোডাক্ট সেল করাতে পারলে তোমাকে বাড়ি,  গাড়ি,  বউ,  হেনতেন সব দিবো তাই ডাক্তার লোভে পড়ে সব ভুলে খামারীদের বুঝিয়ে নানা ঔষধ দিতে থাকে যা আমাদের বোঝা হয়ে দাড়ায়। তাই আসুন আজকের আলোচনায় কয়েকটি ব্রয়লার এর গুরুত্বপূর্ণ রোগের লক্ষন ও প্রতিরোধ এর বিষয় জেনে নেই।ধারাবাহিক পর্বের আজকের ১ম পর্ব আসুন শেষ পর্যন্ত পড়ি ও বুঝি ব্রয়লার মুরগির ঔষধের তালিকা


১ । ব্রুডার নিউমোনিয়া : এটি খামারীদের জন্য সর্ব প্রথম মারাত্মক ব্যাধি। এই রোগ সেডে আসলে আপনাকে পথে বসিয়ে ছাড়বে। এটি ব্রুডিং এর সময় হয়ে থাকে তাই তার নামকরণ করা হয়েছে ব্রুডার নিউমোনিয়া। এই রোগের লক্ষন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে লক্ষ্য করা যায় তবে কিছু লক্ষণ দেখলে আপনি বোঝতে পারবেন যে আপনার সেডে ব্রুডার নিউমোনিয়া হয়েছে। দেখে নেই রোগটির লক্ষণ।

রুগের লক্ষন
  • ব্রুডিং এর সময় দেখবেন বাচ্চাগুলো পাতলা পায়খানা করছে। 
  • বাচ্চা গুলোর তল পেটে পানি জমে গেছে।
  • বাচ্চা গুলো মুখ হা করে উপর দিক করে শ্বাস নিচ্ছ
  • বাচ্চা গুলোর খাবারের রুচি ধীরে ধীরে কমছে।
  • কিছু বাচ্চা নিচের দিকে একবারে লিটারের সাথে লাগিয়ে শ্বাস নিবে।
মরার হার : এই রোগে মরার হার ৭০-৮০%। তবে সঠিক সময়ে চিকিৎসা করলে ৩০-৪০% নিয়ে আসা যায়। 



এই রুগের কারণ:
  1. অতিরিক্ত গরমের কারনেঅতিরিক্ত ঠান্ডার কারনে।
  2. লিটার ভিজা থাকলে।
  3. ব্রুডিং এর সময় তাপ এর বেশকম হলে।
  4. বাচ্চা খারাপ বা বি,  সি ক্যাটাগরির বাচ্চা হলে।
রুগের চিকিৎসা : ব্রুডার নিউমোনিয়া হলে বা উপরে উল্ল্যেখিত লক্ষণ গুলো দেখলে আপনি এর চিকিৎসা যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব শুরু করে দিবেন। আপনি যে সব ঔষধ ব্যবহার করবেন তা হলো : টক্সিন ব্রান্ডের যেকোন একটি ঔষধ,  পানি জমা প্রতিরোধে ইউরিনেক্স, এন্টিবডি তৈরিতে যে কোন একটি এন্টিবায়োটিক ও পালমোকেয়ার  ৪টি ঔষধ নির্দেশনা অনুযায়ী মিশিয়ে ২ বেলা দিবেন রাত ও সকাল। দুপুরে লাইসোভিট দিতে পারেন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে আলোবাতাস এর ব্যবস্তা থাকতে হবে রাতে এবং দিনে। তুতে দিয়ে স্প্রে এবং পানিতে গুলে খাওয়াতে হবে। 

রাণিক্ষেত রুগের লক্ষণ - technologyinfobd

২ । রাণিক্ষেত রোগ : এটি একটি মরণব্যাধি ব্রয়লার এর জন্য। এই রোগে ধরলে সব শেষ করতে সময় লাগেনা। তাই খামারী ভাইয়েরা সচেতন না হলে এটি থেকে বাচতে পারবেননা। এই ভাইরাস যে কোন ভাবে যদি খামারে ডোকতে পারে তাহলে ডোকতে দেরী হবে কিন্তু সব কেড়ে নীতে দেরী হবে না।

লক্ষণ
  • মুরগি প্রথমে খাবার কমিয়ে দিবে।
  • মুরগি বসা বা দাড়ানো সর্বা বস্তায় ঝিমাবে।
  • মুরগি সাদা চুনা পায়খানা করবে।
  • মুরগীর ওজন দিন দিন কমতে থাকবে।
  • মুরগীর পা বা ঘাড়ে আবসতা দেখা যাবে।
  • মুরগি পালক বা ডাকনা ছেড়ে দিবে।
  • মুরগি হা করে শ্বাস নিবে।
  • সবুজ পায়খানা করতে পারে।
মৃত্যুহার : এই রোগে ধরলে সর্বহারা হতে পারেন মিনিটেই। সাভাবিক ভাবে এটির মৃত্যু হার ১০০%। তবে সঠিক সময়ে চিকিৎসায় কমে ২০-৩০% এ নিয়ে আসা যায়।

কারণ : এই রোগের বিভিন্ন কারণ রয়েছে। যেমন :
  1. এটি একটি রাণিক্ষেত ভাইরাস।
  2. খামারে স্প্রে না করা জীবাণুনাশক দিয়ে।
  3. অন্য রাণীক্ষেত আক্রান্ত খামার পরিদর্শন করে আসা।
  4. সেড এর লিটার ভিজা বা স্যাত স্যাতে থাকা।



প্রতিরোধ বা ঔষধ : ব্রয়লার মুরগির ঔষধের তালিকা ভাইরাস রোগের কোন সঠিক চিকিৎসা নেই তবে কিছু ঔষধ রয়েছে ব্যবহার করলে প্রতিরোধ করা যায়। ৬ দিন বয়সে বাচ্চাকে রাণীক্ষেত টিকা দিতে হবে। দ্বীতিয় পর্যায়ে ব্যাকটেরিয়া সংক্রামন টেকাতে যে সকল এন্টিবায়োটিক কাজ করে এগুলো ব্যবহার করতে পারেন। তবে আমার নিজের অভিঙ্গতা অনুযায়ী পেক্সাসিন ও সিপ্রসিন এই দুইটি ব্যবহার করলে ভালো রিজাল্ট পাওয়া যায়।

ব্রয়লার মুরগীর কোন রুগের কোন ঔষধ জেনে নিন - technologyinfobd

৩ । গামবোরো রোগ : গামবোরো হলো একটি ভাইরাস জনীত রোগ। রাণীক্ষেত এর পরে এটি দ্বীতিয় মরণব্যাধি রোগ। এটি সেডে আসে সাধারনত ১৮-১৯ দিন বয়সে। এর পরেও আসতে পারে লক্ষণ দেখে আপনাকে বুঝতে হবে। এই মরণব্যাধি রোগ থেকে খামার রক্ষা করতে হলে আসুন জেনে নেই কি করনীয়।

লক্ষণ : প্রথমেই এই রোগের কিছু লক্ষণ দেখে নেই।
  • মুরগী এই রোগে আক্রান্ত হলে শুধু ঝিমাবে।
  • মুরগির খাবার এর রুচি কমে যাবে।
  • মুরগীর পালক উষ্কখুষ্ক হয়ে যাবে।
  • মুরগী গুলো জড়ো হয়ে ঝিমাবে।
মৃত্যুহার : এই রোগে মৃত্যুহার ৫০%। সময়ের ব্যাবধানে কম বেশী হবে। আপনি শুরুতে রোগ বুঝে ঔষধ প্রয়োগ করলে ১০-১৫% এ নামিয়ে আনা যায়।

প্রতিরোধ বা চিকিৎসা : এটি একটি ভাইরাস জনীত রোগ এর চিকিৎসার সঠিক কোন ঔষধ না থাকলে দ্বীতিয় পর্যায়ের ব্যাক্টেরিয়া প্রতিরোধ কারী এন্টিবায়োটিক দিয়ে এর চিকিৎসা করা যায়। ১১-১২ দিন বয়সে গামবোরো রোগের ভেকসিন খাওয়াবেন। নবোফ্লোর এন্টিবায়োটিক ঔষধটি ব্যবহার করবেন। লিটার শুকনা রাখা হলো গুরুত্বপূর্ণ ঔষধ।
গামবোরো রোগের কারণ : এটি একটি ভাইরাস হওয়ায় যে কোন ভাবে আক্রোমন করতে পারে সেড এ। সেড এর লিটার ভিজা হলে এই রোগে আক্রোমন করে। কম জায়গায় বেশী মুরগি পালন করলে গামবোরো রোগ আক্রোমন করবে। 


৪ । রক্ত আমাশয় বা কক্সি : এটি আরেকটি মরণব্যাধি রোগ ব্রয়লার এর জন্য। এই রোগ আক্রোমন করে ১৬-২১ দিন বয়সে। এই সময়ে সচেতন হলে এই রোগের আক্রোমন থেকে বাচতে পারবেন। রক্তআমাশয় এর জন্য অনেক পোল্ট্রি শিল্প আজ ধ্বংশের পথে। আসুন জেনে নেই এই রোগের লক্ষণ ও প্রতিরোধ সম্পর্কে।

লক্ষণ : রক্তআমাশয় রোগের যে লক্ষণ পাওয়া যায় তা হলো: 
  • মুরগী গুলো রক্ত পায়খানা করবে।
  • মুরগী গুলো খাবার চিটাবে।
  • রক্তের মতো পায়খানা করবে।

রোগের কারণ : এটি একটি ভাইরাস জনীত রোগ। অন্য বন্য প্রানীর ভাইরাস সেড এ আক্রোমন করতে পারে। বেশী পরিমান ভিটামিন মুরগীকে খাওয়ালে। ওজনের ঔষধের ব্যবহার বেশী করলে।

চিকিৎসা ও প্রতিকার : রক্তআমাশয় রোগ থেকে সেড রক্ষা করতে হলে সঠিক সময়ে ব্রয়লার মুরগির ঔষধের তালিকা থেকে ঔষধ খাওয়াতে হবে। রক্তআমাশয় রোগের জন্য ভালো কাজ করে যা এক ডোজে ভালো হয় কক্সিকে পাউডার টি বা কক্সিকিউর। এর চেয়ে ভালো কোন ঔষধ আছে বলে আমার জানা নেই। তবে সাথে এন্টিবায়োটিক আল্ট্রামক্স দিলে আরো ভালো রিজাল্ট পাবেন।




৫ । পেটে পানি জমা : ব্রয়লার মুরগীর মরণব্যাধি রোগের মধ্যে এটি আরেকটি রোগ পেটে পানি জমা। এই রোগ এর বিভিন্ন কারন বা লক্ষণ রয়েছে। নিচে তা নিয়ে আলোচনা করবো। পেটে পানি জমলে মুরগি ঠিকানো অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। তাই সঠিক সময়ে রোগটি চিনে এর প্রতিরোধ করতে না পারলে সব শেষ হয়ে যাবে।

রোগটির লক্ষণ : 
এই রোগের বেশী কোন লক্ষণ নেই তবে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি লক্ষণ হলো :
  • মুরগীর তলপেটে পানি জমে যাবে।
  • মুুরগী সব সময় ঝিমাবে।
  • পানির ওজনে দৌড়াতে পারবেনা।
  • খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিবে।
রোগের কারণ : বিভিন্ন কারনে এই রোগটি হতে পারে। কারণ এটি যেহেতু ভাইরাস নয়। প্রধান কারণ হলো লিটার ভেজা থাকা। দিনের বেলায় সেড এর পার্শ পর্দা না তুলা।  সেডে প্রচুর পরিমাণ গ্যাস বা দূর্গন্ধ হলে। এই কারণগুলোর জন্য মুরগীর পেটে পানি জমে থাকে।

চিকিৎসা ও প্রতিকার : যেসব ঔষধ ব্যবহার করলে রোগটি প্রতিকার করা যায় তাহলো। পানি জমা প্রতিরোধ কারক ঔষধ ইউরিনেক্স বা নেপ্রকেয়ার ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এছাড়া আপনার সেড এর লিটার শুকনা রাখতে হবে। সেড এ পর্যাপ্ত পরিমান আলো বাতাসের ব্যাবস্থা রাখতে হবে।

শেষ কথা : আজকে ধারাবাহিক পর্বের ১ম পর্ব আলোচনা করলাম ব্রয়লার মুরগির ঔষধের তালিকা ও ৫টি রোগের নাম, কারণ,  লক্ষণ ও প্রতিকার নিয়ে। আগামী পর্ব গুলোতে অন্যান্য সকল রোগ নিয়ে আলোচনা করবো। সাথে থাকবেন এবং আমার পোষ্টগুলো শেয়ার করবেন যাতে সকলের নিকট ভালো কিছু পৌছাতে পারে। বিশেষ কথা আমি কোন কোম্পানির এজেন্ট না আমার নিজস্ব খামার আছে ৫০০০ ব্রয়লার এর সেড। আমি নিজে চিকিৎসা করি কোন ডাক্তারের সহযোগীতা নেই না তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম আপনাদের উপকারে আসতে পারে এই জন্য। আসা করে ভুল বুঝবেননা। আজ আর নয় ভালো থাকুন সু্স্ত থাকুন। করোনাভাইরাস এর মহামারিতে ঘরে অবস্থান করুন। ধন্যবাদ 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ